আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালন; ছাগলের খামার করার নিয়ম; ছাগলের খামার পরিকল্পনা

♦ লাভজনকভাবে খামার পরিচালনা করতে হলে খামারে পালনের জন্য ছাগলের খামার করার নিয়মগুলো জানা পাশাপাশি অবশ্যই ছাগল নির্বাচনের সময় কয়েকটি বিষয় সতর্কতার সাথে বিবেচনা করতে হবে।
♦ আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালন খামারের জন্য ক্রয়কৃত/নির্বাচিত ছাগলকে সকল প্রকার সংক্রামক ব্যাধি মুক্ত হতে হবে। তা ছাড়া চর্মরোগ, চোখের রোগ এবং বংশগত রোগ ব্যাধি থাকা চলবে না।
♦ ছাগলের খামার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কোন এলাকায় সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে বা কিছুদিন পূর্বে হয়েছিল এমন এলাকা হতে ছাগল সংঘহ করা যাবে না। খামারে প্রতিপালনের জন্য উন্নত জাতের ছাগী ও পাঠা নির্বাচন করতে হবে।
নিম্নে উন্নত জাতের ছাগী ও পাঠা নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।
(১) ছাগী নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ
ছাগলের খামার শুরু করার জন্য, মেয়ে ছাগল কেনার ক্ষেত্রে খেয়াল লারবেন-
১। নির্বাচনের সময় ছাগীর বয়স ৯-১৩ মাসের মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয় |
২। মাথা লম্বা ও মধ্যম আকারের হবে। মুখ ভরাভরা হবে।
৩। কুজ ও ঘাড় প্রায় সরল রেখায় বা সোজা থাকবে |
৪। বুক মধ্যম আকৃতির ও বেশ চওড়া হবে যাতে সামনের দুই পা সামগ্রস্যপূর্ণ দূরত্বে থাকে।
৫। পেট তুলনামূলকভাবে বড়, পাঁজরের হাড় চওড়া ও প্রসারণশীল হবে।
৬। সামনের পা দুটি সোজা, দৃঢ় ও হাড়গুলো মজবুত হবে। পায়ের খুর সমান্তরালভাবে মাটিতে পড়বে। নির্বাচিত ছাগী অধিক উৎপাদনশীল বংশের হবে। ছাগীর মা, দাদী ও নানীর বছরে ২ বার বাচ্চা দেওয়ার এবং প্রতিবারে একাধিক বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড থাকতে হবে।
৭। নির্বাচিত ছাগীর মা, দাদী ও নানীর বাচ্চা মৃত্যুর হার ১০% এর নিচে থাকতে হবে।
৮। নির্বাচিত ছাগীর মা, দাদী ও নানীর দৈনিক গড়ে ৫০০ গ্রাম দুখ প্রদান করার রেকর্ড থাকতে হবে |
৯। নির্বাচিত ছাগীর ওলান বড়, বাট সামসযপূ্ণ, কিছুটা ভিতরের দিকে বাঁকানো এবং দুধের শিরা লক্ষণযোগ্য হবে।
(২) পাঠা নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ
ছাগলের খামারের জন্য প্রজনেন কাজ লাগানোর জন্য পুরুষ কেনার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন-
১। নির্বাচনের সময় পাঁঠার বয়স ১২-১৪ মাসের মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয় |
২। পাঠা হবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সকল প্রকার যৌন ব্যাধি মুক্ত।
৩। পশম মসৃণ ও ছোট ছোট, সিক্ষের মত চকচকে হবে।
৪। মাথা ও ঘাড় পুরুষালি, ভারী হবে। শরীরের পেছনের ভাগ সবল ও দৃঢ় হবে |
৫। অন্তকোষের আকার বড় ও সুগঠিত এবং দৃ্টিযোগ্য হবে কিন্তু বেশী ঝুলানো থাকবে না।
৬। পাঁজরের হাড়গুলো স্পষ্ট, মজবুত ও দৃঢ় হবে।
৭। পাঠার মা, দাদী ও নানীর দুধ প্রদানের রেকর্ড কমপক্ষে ৭০০ গ্রাম হবে।
৮। পাঠার মা, দাদী ও নানীর বাচ্চা মৃত্যুর হার কম হবে, বছরে ২ বার বাচ্চা প্রদান এবং প্রতিবারে দুই. বা ততোধিক বাচ্চা প্রদানের রেকর্ড থাকতে হবে।
৯। পেছনের পা দুটি মজবুত, সুঠাম ও শক্তিশালী হতে হবে। জাম্প করায় পটু হতে হবে ৷
১০। চামড়া নরম ও ডিলেঢালা হবে, টানলে উঠানামা করবে।
পরিশেষে এই বলব যে, লাভজনক ছাগলের খামার স্থাপনে উৎপাদন বৈশিষ্ট্য উন্নত গুনাগুনসম্পন্ন ছাগী ও পাঁঠা সংগ্রহ একটিমূল দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত। মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন বয়সী ছাগী ও পাঁঠানির্বাচন সফলভাবেপালনের জন্যপ্রযুক্তিগত তথ্যাদি সরবরাহ অত্যাবশ্যক।

বাংলাদেশে বর্তমানে বাণিজ্যিক ছাগল প্রজনন খামার না থাকায় মাঠ পর্যায় হতেছাগল সংগ্রহ করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে ব্যাক বেঙ্গল ছাগল, বাচ্চা ও দুধ উৎপাদনক্ষমতার ভিন্নতা বিদ্যমান। উক্ত ভিন্নতা বংশ এবং পরিবেশগত কারণ বাস্বতন্ত্র উৎপাদন দক্ষতার জন্য হতে পারে। সে প্রেক্ষাপটে ব্যাক বেঙ্গল ছাগল খামারপ্রতিষ্ঠার জন্য বংশ বিবরণের ভিত্তিতে বাছাই ও নিজস্ব উৎপাদন বা পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলীর ভিত্তিতে বাছাই বিবেচনায় রেখে ছাগল নির্বাচন করা যেতে পারে।
অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।