বাছুরের যত্ন, বাছুরের পরিচর্যা, গরুর বাছুরের যত্ন, নবজাতক বাছুরের যত্ন, বকনা বাছুরের পরিচর্যা

ইনফরমেশন বাংলা এর নিয়মিত পাঠকবৃন্দ আপনাদের সকলকে আজকের বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা শীর্ষক আলোচনায় আপনাদেরকে স্বাগতম। আপনারা অনেকেই বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা বিষয়ক প্রায়ই এই ধরণের প্রশ্ন করেছেন। তাই আজকে আপনাদের সামনে উক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর তুলে ধরা হলো।
আজকের আলোচনায় আপনাদের যে সকল প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া হয়েছে তা হলো- বাছুরের যত্ন কি কি নিতে হয়? বাছুরের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়? গরুর বাছুরের যত্ন কিভাবে করব? নবজাতক বাছুরের যত্ন ভিাবে করতে হবে? বকনা বাছুরের পরিচর্যা কিভাবে করব? বাছুরের দানাদার খাদ্য কি পরিমাণ ও কখন খাওয়াব? বাছুরের বাসস্থান কেমন হওয়া উচিত? বাছুরের খাদ্য ব্যবস্থাপনা কি ভাবে করব? বাছুরের সম্পূরক খাদ্য কিভাবে তৈরি করব? বাছুরের খাবার তালিকা জানতে চাই, bachar khabar talika, bachar khabar, বকনা বাছুরের খাবার তালিকা, বাছুরের দানাদার খাবার, বাছুরের খাদ্য তালিকা, বাছুরের দানাদার খাদ্য, বাছুর গরুর খাবার, গরুর বাছুরের খাদ্য তালিকা, বাছুরের খাদ্য তালিকা, গরুর বাছুরের খাদ্য তালিকা, বকনা বাছুরের খাদ্য, বাছুরের দানাদার খাদ্য, বাছুর গরুর খাদ্য, বকনা বাছুরের খাদ্য তালিকা, বাছুরের খাদ্য ব্যবস্থাপনা, ষাড় বাছুরের খাবার, বাছুরের সম্পূরক খাদ্য কিভাবে প্রদান করব? প্রভৃতি।
আজকের পর্বে উক্ত বাছুরের যত্ন সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর একটি আলোচনার মাধ্যমে একসাথে দেওয়ার চেষ্টা করব, আশা মনোযোগ সহকারে শেষ অবধি পড়বেন।
(১) বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা

১। ভবিষ্যৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে যথাযথভাবে বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা করে লালন-পালন করতে হবে। বাছুরের যত্ন মূলত গাভী গর্ভবতী থাকা অবস্থা থেকেই হরতে হবে। এক্ষেত্রে গাভীকে অন্তত গর্ভের শেষ তিনমাস পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করতে হবে। বাছুরের স্বাস্থ্য রক্ষা ও রোগমুক্ত রাখার জন্য বিশেষ কয়েকটি নিয়মের প্রতি খেয়াল রাখলে ভবিষ্যতে অসুখ বিসুখ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
২। অপরিষ্কার স্যাঁতস্যাঁতে জায়গাতে বাছুর প্রসব করলে বাছুরের বিভিন্ন প্রকার রোগ দেখা দিতে পারে। তাই গাভী প্রসবের প্রাক্কালে গাভীকে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন ও শুকনো জায়গায় রাখতে হবে।
৩। স্বাভাবিক প্রসবের লক্ষণ ব্যতীত অস্বাভাবিক লক্ষণ প্রকাশ পেলে বাছুরের যত্ন প্রতি মনোযোগ দিতে হবে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
৪। জন্মের পর পরই বাছুরকে শুকনো খড়কুটো বা ছালার উপর রাখতে হবে। বাছুরের নাক ও মখু মন্ডল হতে লালা বা ঝিল্লি পরিষ্কার করতে হবে। নতুবা শ্বাসরূদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গাভী যেন তার নবজাত বাছুরকে চাটতে পারে সে সুযোগ করে দিতে হবে।
৫। যদি বাছুরের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় তবে বুকের পাঁজরের হাড়ে আস্তে আস্তে কিছুক্ষণ পর পর কয়েক বার চাপ প্রয়োগ করতে হবে। বাছুরের নাকে, মুখে, নাভীতে ফুঁ দিলেও ভাল ফল পাওয়া যায়।
৬। জন্মের সাথে সাথে বাছুরের নাভীতে কিছু এন্টিসেপটিক যেমন টিংচার আয়োডিন, ডেটল বা সেভলন লাগাতে হবে। ফলে ধনুষ্টংকর, নাভী ফুলা ইত্যাদি হবার সম্ভাবনা থাকে না।
৭। গাভী যেন তার বাছুরকে চাটতে পারে সে সুযোগ করে দিতে হবে অথবা শুকনা খড় বা ছেঁড়া কাপড় দিয়ে বাছুরের শরীর ভাল ভাবে মুছে দিতে হবে। এ অবস্থ্যায় বাছুরকে পানি দিয়ে ধৌত করা সমীচিন হবে না। কারণ পানির সংস্পর্শে আসলে বাছুরের ঠান্ডা লেগে যেতে পারে এবং নানা ধরনের রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
৮। নবজাত বাছুরকে ১-২ ঘন্টার মধ্যে শাল দুধ খাওয়াতে হবে, এই শালদুধ খাওয়ালে বাছুরের রোগ প্রতিরোধ মতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এই দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ’এ’ যা বাছুরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৯। বাছুরকে দুই সপ্তাহ পর দুধ সরবরাহের সাথে সাথে অল্প পরিমাণ কচি ঘাস ও দানাদার খাদ্য খাওয়ানো উচিত। নতুবা এর হজম ক্ষমতা কমে যাবে এবং পাকস্থলির পরিপক্কপতা দেরীতে আসবে।
১০। বাছুরের যত্ন প্রতি সর্বদাই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। সময় মত খাদ্য ও পানি সরবরাহ দিতে হবে। রোগ প্রতিরোধক টিকা দিতে হবে।
(২) বাছুরের খাদ্য ব্যবস্থাপনা
১। বাছুরের জন্মের পর থেকে ৩ মাস বয়স পর্যন্ত বাছুরকে যতটুকু পুষ্টিসাধন করা হবে পরবর্তী জীবনকালের বৃদ্ধি ও উৎপাদন তার উপর সিংহভাগ নির্ভর করবে।
২। জন্মের প্রথম দিন থেকে সাধারণতঃ ৩ মাস বয়স পর্যন্ত বাছুরের দৈহিক বৃদ্ধি ও ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ সময় যদি শরীরে পুষ্টির অভাব হয় ও বাছুরের যত্ন না নেওয়া হয় তবে এর যৌনাঙ্গের বিকাশ ও যৌবন প্রাপ্তি দেরীতে আসবে। ফলে ভবিষ্যতে গর্ভ ধারণ ও বাচ্চা উৎপাদনও কম হবে। অনেক ক্ষেত্রে বাছুর পুষ্টির অভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে মারাও যেতে পারে। এসব কারণে জন্মের পর থেকেই পরিমিত খাদ্য সরবরাহের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
৩। জন্মের পরপরই বাছুরকে মায়ের শাল দুধ খাওয়াতে হবে। অর্থাৎ বাছুর জন্মানোর আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টার মধ্যে শাল দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে। শাল দুধ খাওয়ানোর নিয়ম হলো, বাছুরের ওজন ১০ কেজি হলে ১ কেজি শাল দুধ, বাছুরের ওজন ২০-২৫ কেজি হলে ১.২-১.৫ কেজি শাল দুধ খাওয়াতে হবে।
৪। বাচ্চাকে গাভী থেকে দুধ চুষে খেতে দিতে হবে। এতে গাভী বেশী দুধ দিবে এবং গাভী দেরীতে দুধ দেয়া বন্ধ করবে।
৫। সাধারণতঃ বাছুরকে দু’বেলা দুধ খেতে দিতে হবে এবং নিয়মিত একই সময়ে দুধ খাওয়াতে হবে ও বাছুরের যত্ন নিতে হবে।
৬। বাছুরকে দুই সপ্তাহ পর দুধ সরবরাহের সাথে সাথে অল্প পরিমাণ কচি ঘাস ও দানাদার খাদ্য খাওয়ানো প্রয়োজন। তা করা না হলে বাছুরের হজম ক্ষমতা কমে যাবে এবং পাকস্থলির পরিপক্কপতা দেরীতে আসবে।
(৩) জন্ম থেকে দুধ ছাড়া পর্যন্ত বাছুরকে দুধ, দানাদার ও ঘাস সরবরাহ অর্থ্যাৎ বাছুরের খাবার পরিমান, bachar khabar talika

ক) গরুর বাছুরের বয়স যখন ০-৭ দিন (১ম সপ্তাহ)
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে:
২ লিটার।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ:
- এ বয়সে দানাদার ও খড় ঘাসের প্রয়োজন নেই।
খ) গরুর বাছুরের বয়স যখন ২ সপ্তাহ
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- ৩ লিটার।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ-
- দানাদার খাদ্য অর্থাৎ কাফ স্টার্টার (২০% আমিষ সমৃদ্ধ) এবং কিছু কচি সবুজ ঘাস বাছুরকে সরবরাহ করতে হবে।
গ) গরুুর বাছুরের বয়স যখন ৩য়-১২ সপ্তাহ (৩ মাস)
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- ৪ লিটার।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ-
- দৈনিক ০.৫ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ১ কেজি হারে উচ্চ মানের কচি নরম সবুজ ঘাস দিতে হবে।
- দানা খাদ্যে আমিষের ভাগ ২০% এর কম এবং আঁশের ভাগ ১০% এর উপরে থাকবে না।
ঘ) গরুর বাছুরের বয়স যখন ১৩-১৬ সপ্তাহ (৪ মাস)
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- ৩ লিটার।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ-
- দৈনিক ০.৭৫ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ৩ কেজি সবুজ কাঁচা নরম ঘাস দিতে হবে।
- দানা খাদ্যে আমিষের ভাগ ২০% এর কম এবং আঁশের ভাগ ১০% এর উপরে থাকবে না।
ঙ) গরুর বাছুরের বয়স যখন ১৭-২০ সপ্তাহ (৫ মাস)
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- ২ লিটার।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ-
- দৈনিক ১.০-১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ৭ কেজি সবুজ কাঁচা নরম ঘাস দিতে হবে।
- দানা খাদ্যে আমিষের ভাগ ২০% এর কম এবং আঁশের ভাগ ১০% এর উপরে থাকবে না।
চ) গরুুর বাছুরের বয়স যখন ২১-২৪ সপ্তাহ (৬ মাস)
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- ১ লিটার।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ-
- দৈনিক ১.০-১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ৭ কেজি সবুজ কাঁচা নরম ঘাস দিতে হবে। ৬ মাস এর পর থেকে বাছুরকে দুধ খায়োনোর প্রয়োজন হয় না।
- দানা খাদ্যে আমিষের ভাগ ২০% এর কম এবং আঁশের ভাগ ১০% এর উপরে থাকবে না।
বাছুরকে অতিরিক্ত দুধ সরবরাহ করা হলে বাছুরের পেট খারাপ হবে এবং বাছুর দুর্বল হয়ে পড়বে। এ সময়ে বাছুরের চিকিৎসা না করলে বা বাছুরের প্রতি সজাগ দৃষ্টি না রাখলে বাছুর অন্যান্য জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অন্যদিকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুধ খাওয়ানো সুধু পেট খারাপ নয়, অপচয়ও বটে।
ছয় মাসের ঊর্দ্ধে বাছুরকে দুধ পান করানো থেকে বিরত রাখতে হবে। তবে এ সময়ে তাদেরকে পরিমানমত দানাদার খাদ্য, সবুজ ঘাস ও খড় সরবরাহ করতে হবে।
(৪) ছয় মাসের ঊর্দ্ধে বাছুরকে দুধ, দানাদার, সবুজ ঘাস ও খড় বাছুরের খাবার পরিমান bachar khabar talika
ক) গরুুর বাছুরের বয়স যখন ২৫-৩৫ সপ্তাহ
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- দুধ পান বন্ধ করতে হবে।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ-
- দৈনিক ১.০-১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ৭ কেজি সবুজ কাঁচা নরম ঘাস ও কিছু খড় দিতে হবে।
- দানা খাদ্যে আমিষের ভাগ ২০% এর কম এবং আঁশের ভাগ ১০% এর উপরে থাকবে না।
- বাছুর গরুর বয়স ছয় মাস পার হলে তার ওজনের ১% ইউএমএস দানাদার খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
খ) গরুুর বাছুরের বয়স যখন ৩৬-৫০ সপ্তাহ
দৈনিক দুধ খাওয়াতে হবে-
- দুধ খাওয়ানো হবে না।
দানাদার ও ঘাস সরবরাহ–
- দৈনিক ১.৫-২.০ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ১০-১২ কেজি সবুজ কাঁচা নরম ঘাস ও ১-২ কেজি খড় দিতে হবে।
- দানা খাদ্যে আমিষের ভাগ ২০% এর কম এবং আঁশের ভাগ ১০% এর উপরে থাকবে না।
- বাছুর গরুর ওজনের ১% ইউএমএস দানাদার খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
(৫) বাছুরের জন্য দানাদার খাদ্য মিশ্রণ ফরমূলা
১। গমের ভুষি ৪০%
২। ডালের ভুষি ১৫%
৩। ছোলা ভাংগা ১০%
৪। তিলের খৈল ১৫%
৫। মাটি কলাই ভাংগা ১০%
৬। ভুট্টা ভাংগা ৫%
৭। খনিজ দ্রব্য ৪%
৮। লবণ ১%
মোট = ১০০%
(৬) বাছুরের বাসস্থান

বাছুরকে রোগমুক্ত রাখার জন্য তাদেরকে আলাদা আলাদা ঘরে রাখতে হবে এবং এর ফলে প্রতিটি বাছুরের রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হবে। অনেক বাছুর একসাথে থাকলে দুর্বল বাছুরগুলো আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ দূর্বলগুলো সবলদের সাথে প্রতিযোগীতা করে প্রয়োজন মত খেতে পারে না।
সুষ্ঠ ব্যবস্থ্যাপনার জন্য বাছুরকে তিন দলে ভাগ করে বাছুরের বাসস্থ্যান করা প্রয়োজন-
১। এক বছরের কম বয়সী।
২। এক বছরের বেশী বয়সী বকনা বাছুর।
৩। এক বছরের বেশী বয়সী এঁড়ে বাছুর।
বাছুরের বাসস্থান যেমন হওয়া উচিত-
১। বাছুরের ঘর ঢালু এবং শুকনো ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া প্রয়োজন।
২। বাসস্থ্যানে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের সরাসরি প্রবেশের ব্যবস্থ্যা থাকতে হবে।
৩। গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরম ও শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডা দ্বারা বাছুরগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৪। ঘরের মেঝেতে শুকনো খড় বা ছালার চট বিছিয়ে দিতে হবে।
৫। গ্রামীণ পর্যায়ে বাঁশ ও কাঠের সাহায্যে অতি সহজেই ঘর নির্মাণ করা যেতে পারে।
৬। ঘরে খাদ্য ও পরিষ্কার পানি সরবরাহের জন্য পাত্র রাখতে হবে।
৭। বাছুরের ঘর স্যাঁতস্যাঁতে ময়লা আবর্জনাময় হলে বাছুরের শ্বাস কষ্ট হয়।
(৭) বাছুরের বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকার
১। সংক্রামক রোগ
⮚ সাদা বাহ্য বা কাফ স্কাওয়ার, নেভাল ইল বা নাভীর রোগ, সালমোনেলোসি, নিউমোনিয়া, বাদলা, তড়কা, ধনুস্টংকার, ক্ষুরা, জলাতংক, ইত্যাদি। এ সকল রোগ দমনে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী ব্যবস্থ্যা নিতে হবে।
২। কৃমি বা পরজীবীজনিত রোগ
পরজীবী সাধারনত দুই ধরনের। যথা-
⮚ দেহাভ্যন্তরের পরজীবী/কৃমি: গোল কৃমি; ফিতা কৃমি; পাতা কৃমি। এসকল রোগ দমনে বাছুরকে দু’মাস বয়স হলে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানো আরম্ভ করতে হবে।
⮚ বহিঃদেহের পরজীবী: এগুলোকে দেহের পোকা বলা হয়। এরা বাছুরের ত্বকে বাস করে ত্বকের যথেষ্ট ক্ষতি কওে থাকে। বহিঃদেহের পরজীবীর মধ্যে বাছুরে আঁঠালি, উকুন, মাছি, মাইটস বিশেষ উল্লেখ যোগ্য। বহিঃদেহের পরজীবী দমনে বাছুরের শরীর ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।
⮚ বাছুরের বয়স ৬ মাস হলে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী বহিঃদেহের পরজীবী ধ্বংসকারী ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
৩। প্রোটজোয়াজনিত রোগ
⮚ প্রোটোজোয়া এক প্রকার এককোষী প্রাণী। বাছুর বিভিন্ন ধরনের প্রোটোজোয়া রয়েছে, যেমন- বেবেসিয়া, এনাপ্লাজমা, ককসিডিয়া, ইত্যাদি। তবে বাছুরে সাধারণতঃ ককসিডিয়া নামক প্রোটোজোয়ার আক্রমণ বেশী হতে দেখা যায়।
⮚ এ রোগ দমনে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী ব্যবস্থ্যা নিতে হবে।
৪। সাধারণ রোগ-ব্যাধি
⮚ নবজাত বাছুরের সাধারণ রোগ: নবজাত বাছুরের সাদা উদরাময় রোগ, বাছুরের নাভি ফোলা রোগ।
⮚ অন্যান্য বাছুরের সাধারণ রোগ: বিষক্রিয়াজনিত রোগ, অপুষ্টিজনিত রোগ, পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ যেমন- পেট ফাঁপা, উদারাময়, কোষ্ঠকাঠিণ্য এবং বিপাকীয় রোগ।
⮚ এ সকল রোগের চিকিৎসাও ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী করতে হবে।
প্রিয় খামারি ভায়েরা আশা করি আপনারা আপনাদের বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা বিষয়ক সকল প্রশ্নসমূহের উত্তর পেয়েছেন। আরও যদি কোন প্রশ্ন আপনাদের থেকে থাকে তাহেলে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
যে সকল পাঠক আমাদের ব্লগে নতুন যদি পশুদের বিভিন্ন রকম রোগ তাদের চিকিৎসা এবং মেডিসিন সম্পর্কে আরও জানতে চান তারা আমাদের এই ব্লগ ওয়েবসাইটটিতে এ নিয়মিত ভিজিট করবেন এবং আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটিকেও সাবস্ক্রাইব ও আমাদের ফেসবুক পেজটিতে একটি লাইক দিয়ে রাখবেন রাখবেন। তাহলে নতুন কোন পোষ্ট করা হলে তা সহজেই বুঝতে পারবেন।
আমাদের আজকের এই আলোচনা এখানেই শেষ করে দিচ্ছে সকলে ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।