যাকাত দেওয়ার নিয়ম: যাকাত কী, কেন ও কীভাবে?

যাকাত দেওয়ার নিয়ম

(১) যাকাত অর্থ কি? কাকে বলে?

যাকাত অর্থ কি কাকে বলে

‘যাকাত’ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি, পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি।

ইসলামি পরিভাষায় ধনী ব্যক্তিদের নিসাব (নির্ধারিত) পরিমাণ সম্পদ থাকলে নির্দিষ্ট অংশ গরিব ও অভাবী লোকদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়াকে যাকাত বলে।

যাকাত প্রদানের মাধ্যমে সম্পদ ব্যক্তিবিশেষের হাতে পুঞ্জীভূত থাকে না। আর মানুষের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত থাকুক আল্লাহ তায়ালা তা পছন্দ করেন না। তিনি চান সম্পদ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হোক, সমাজের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হোক। এ বিবেচনায় যাকাত অর্থ বৃদ্ধি।

যাকাত প্রদানে দাতার অন্তর কৃপণতার কলুষ থেকে পবিত্র হয়। বিত্তশালীদের সম্পদে দরিদ্রের অধিকার আছে। কাজেই গরিবের নির্ধারিত অংশ দিয়ে দিলে অবশিষ্ট সম্পদ ধনীদের জন্য পবিত্র হয়ে যায়। এদিক বিবেচনায় যাকাত অর্থ পবিত্রতা।

যাকাত দিলে সম্পদে আল্লাহ বরকত দান করেন। ইসলামের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের মধ্যে যাকাত অন্যতম। কুরআন মজিদের বহু জায়গায় সালাতের সাথে যাকাত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“আর তোমরা নামায কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর।”

(সূরা আল-মুয্যাম্মিল, আয়াত ২০)

যাকাত হলো দরিদ্রের আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার। ধনীদের দয়া বা অনুগ্রহ নয়। বরং এটি আদায় করা ধনীদের উপর ফরজ।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তাদের (ধনীদের) ধন-সম্পদে অবশ্যই দরিদ্র ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।”

(সূরা আয্-যারিয়াত, আয়াত ১৯)

শরিয়তের বিধান অনুযায়ী নামায আদায় করলে, আদায়কারীর জন্য যেমন পুরস্কারের ঘোষণা আছে, তেমনি যাকাত (ফরজ হলে) আদায়কারীর জন্যও সুসংবাদ রয়েছে। যেমন, যাকাত দিলে মাল পবিত্র হয় এবং সম্পদে আল্লাহ তায়ালা বরকত দেন। যাকাত প্রদানকারীদের আখিরাতে অধিক পরিমাণ পুরস্কার দেওয়া হবে যা মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না।

পড়ুন
যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

হাদিসে কুদসিতে আছে,

“আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাকে বলেন, হে বনি আদম! আমার পথে খরচ করতে থাক। আমি আমার অফুরন্ত ভাণ্ডার থেকে তোমাদের দিতে থাকব”।

(বুখারি ও মুসলিম)

যাকাত আদায়কারীদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“আর আল্লাহ বলেন, আমি অবশ্যই তোমাদের সাথে আছি, যদি তোমরা নামায কায়েম কর এবং যাকাত দাও।”

(সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ১২)

যাকাত দানকারীর পুরস্কার ও কৃপণ ব্যক্তির দুঃসংবাদ সম্পর্কে অন্য এক হাদিসে আছে,

“দানশীল ব্যক্তি আল্লাহর নিকটবর্তী, জান্নাতের নিকটবর্তী, আল্লাহর বান্দাদের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম থেকে দূরবর্তী। অপরদিকে কৃপণ আল্লাহ থেকে দূরে, আল্লাহর বান্দাদের থেকে দূরে এবং জাহান্নামের নিকটে। একজন জাহিল দানশীল একজন কৃপণ আবিদ অপেক্ষা আল্লাহর কাছে অনেক বেশি পছন্দনীয়।”

(তিরমিযি)

কেউ যদি সম্পদ জমা করে রাখে দরিদ্র ও বঞ্চিতদের প্রাপ্য যথাযথভাবে আদায় না করে, তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।

এ সম্পর্কে কুরআন মজিদে বলা হয়েছে,

“আর যারা সোনা রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদেরকে কষ্টদায়ক শাস্তির সংবাদ দাও। সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে কপালে, পাঁজরে এবং পিঠে দাগ দেওয়া হবে, সেদিন বলা হবে এ তো সে সম্পদ, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। এখন সে সঞ্চিত সম্পদের স্বাদ গ্রহণ কর।”

(সূরা আত্তাওবা, আয়াত ৩৪-৩৫)

যাকাত ফরজ হওয়া সত্ত্বেও যারা তা আদায় করে না এবং যাকাত দিতে অস্বীকার করে, তাদের ব্যাপারে ইসলামি বিধান হচ্ছে, পার্থিব জীবনে তারা কৃপণ হিসেবে আখ্যায়িত হবে এবং পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“আর ধ্বংস ঐসব মুশরিকের জন্য, যারা যাকাত দেয় না ও আখিরাতকে অস্বীকার করে।” (সূরা হা-মীম-আস্-সাজদাহ, আয়াত ৬-৭)

ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা.)-এর শাসনামলে কিছু লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করল। খলিফা তাদের ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সমতুল্য মনে করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, মহানবি (সাঃ)-এর যুগে যারা যাকাত দিত, তাদের মধ্যে কেউ যদি একটি ছাগলের বাচ্চা দিতেও অস্বীকার করে তবে তার বিরুদ্ধে আমি জিহাদ করব। হযরত আবু বকর (রা.)-এর বক্তব্যের যৌক্তিকতার সাথে নিম্নবর্ণিত হাদিসের বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়।

পড়ুন
যাকাত শব্দের অর্থ, কী, কাকে বলে, যাকাত কেন দিতে হয়? যাকাতের গুরুত্ব

হাদিসে আছে,

“আল্লাহর কসম, যারা নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই লড়াই করব।”

(বুখারি)

প্রত্যেক মুমিন বান্দার উচিত পরকালের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় যথানিয়মে যাকাত আদায় করা। অন্যকে যাকাত দানে উৎসাহিত করা। ইসলামি বিধানমতো যাকাত আদায় করে সমাজের অসহায় দরিদ্রের অবস্থার উন্নতি করা।

(২) যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত কতটি ও কি কি?

যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত কতটি ও কি কি

যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত সাতটি। শর্তগুলোর বিবরণ নিচে দেওয়া হলো- 

  1. মুসলমান হওয়া: যাকাত ফরজ হওয়ার প্রথম শর্ত হলো মুসলমান হওয়া। অমুসলিমদের উপর যাকাত ফরজ নয়। কাজেই কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলে তাকে তার অতীত জীবনের যাকাত দিতে হবে না। যেদিন মুসলমান হবে সেদিন থেকে হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
  2. নিসাবের মালিক হওয়া: যে পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে শরিয়তে যাকাত ফরজ হয়, সে পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া।
  3. নিসাব পরিমাণ সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হওয়া: যেসব দ্রব্যের উপর মানুষের জীবনযাপন নির্ভর করে, সেসব জিনিসপত্রকে প্রয়োজনীয় দ্রব্য বলে। যেমন : খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, বসবাসের বাড়িঘর, পেশাজীবীর যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। যানবাহনের নৌকা, সাইকেল, মোটর, পশু, কৃষিকাজের সরঞ্জাম, পড়ালেখার সরঞ্জাম এসবও প্রয়োজনীয় জিনিসের অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর উপর যাকাত ফরজ হবে না।
  4. ঋণগ্রস্ত না হওয়া: ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তার উপর যাকাত ফরজ হবে না। কারণ সে জীবনধারণের মৌলিক প্রয়োজনেই ঋণ গ্রহণ করেছে। তবে ঋণ পরিশোধ করার পর যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ কারো হাতে থাকে তাহলে তাকে যাকাত দিতে হবে।
  5. মাল এক বছরকাল স্থায়ী থাকা: নিসাব পরিমাণ সম্পদ ব্যক্তির হাতে এক বছর কাল স্থায়ী না হলে, তার উপর যাকাত ফরজ হয় না। হাদিসে আছে, “ঐ সম্পদে যাকাত নেই যা পূর্ণ এক বছর মালিকানায় না থাকে।” (ইবনে মাজাহ)
  6. জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া: যাকাত ফরজ হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া। জ্ঞানবুদ্ধিহীন তথা পাগলের উপর যাকাত ফরজ নয়।
  7. বালেগ হওয়া: যাকাতদাতাকে অবশ্যই বালেগ তথা প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। শিশু, নাবালেগ যত সম্পদের মালিকই হোক না কেন, বালেগ হওয়ার পূর্বে তার উপর যাকাত ফরজ হয় না।
পড়ুন
যাকাতের হিসাব/নিসাব ও যাকাত প্রদানের খাত

(৩) যাকাতের নিসাব: কত টাকা থাকলে যাকাত দিতে হয়?

যাকাতের নিসাব কত টাকা থাকলে যাকাত দিতে হয়

‘নিসাব’ আরবি শব্দ। এর অর্থ নির্ধারিত পরিমাণ। শরিয়তের পরিভাষায় যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নির্ধারিত পরিমাণকে নিসাব বলে।

সারাবছর জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের পর বছর শেষে যার হাতে নিসাব পরিমাণ সম্পদ উদ্বৃত্ত থাকে তাকে বলা হয় সাহিবে নিসাব বা নিসাবের মালিক। আর সাহিবে নিসাবের উপরই যাকাত ফরজ।

  • নিসাবের পরিমাণ হলো, সোনা কমপক্ষে সাড়ে সাত তোলা অথবা রুপা কমপক্ষে সাড়ে বায়ান্ন তোলা অথবা ঐ মূল্যের অর্থ বা সম্পদ। ঐ পরিমাণ সম্পদ কারো নিকট পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী থাকলে ঐ সোনা, রুপা বা সম্পদের মূল্যের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসাবে দেওয়া ফরজ। কিন্তু সম্পদ নিসাবের কম থাকলে যাকাত দেওয়া ফরজ নয়।
  • এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সম্পদ নষ্ট হয়ে গেলে যাকাত দিতে হবে না। কারো হাতে যদি বছরের প্রথমে নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, বছরের মাঝে কোনো কারণে নিসাব হতে কমে যায় এবং বছর শেষে আবার নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে গেলে তাকে যাকাত দিতে হবে।
  • স্ত্রীলোকের ব্যবহার্য সোনা, রুপার অলংকার জীবনের আবশ্যকীয় মৌলিক বস্তুর অন্তর্ভুক্ত নয়। কাজেই অলংকার নিসাব পরিমাণ হলে তাকে যাকাত দিতে হবে। সোনা, রুপা ব্যতীত অন্য কোনো ধাতু যথা: তামা, কাঁসা, পিতল ইত্যাদি ব্যবহার্য জিনিস হিসাবে থাকলে যাকাত দিতে হবে না। তবে ব্যবসায়ের সামগ্রী হলে যাকাত দিতে হবে। এর জন্য শর্ত হচ্ছে এসব সামগ্রী এক বছরকাল হাতে স্থায়ী থাকা এবং নিসাব পরিমাণ হওয়া।
  • উৎপন্ন শস্যের যেমন ধান, গম, যব, খেজুর ইত্যাদি শস্য সেচ প্রদান ছাড়া বৃষ্টির পানিতে জন্মালে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সব ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হবে। একে উশর বলা হয়। আর সেচ ব্যবস্থায় উৎপন্ন ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হয়।
পড়ুন
যাকাত দেওয়ার নিয়ম কি? যাকাত কে দিবে? কাকে দিবে? এবং কাকে দেওয়া যাবে না?

(৪) যাকাতের খাত: যাকাতের হকদার কারা? যাকাত কাদের দেওয়া যাবে?

যাকাতের খাত যাকাতের হকদার কারা যাকাত কাদের দেওয়া যাবে

ক) মাসারিফ অর্থ, কি, কাকে বলে?

মাসারিফ আরবি শব্দ। এর অর্থ ব্যয় করার খাত। শরিয়তের পরিভাষায় ইসলামি বিধান অনুযায়ী যাদেরকে যাকাত দেওয়া যায়, তাদেরকে বলা হয় যাকাতের মাসারিফ।

যাকাতের মাসারিফ অর্থাৎ কোন কোন খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করতে হবে আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

কুরআন মজিদে বলা হয়েছে,

“যাকাত তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাস মুক্তির জন্য, ঋণ ভারাক্রান্তদের, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য, ইহা আল্লাহর বিধান।”

(সূরা আত- তাওবা, আয়াত ৬০)

খ) যাকাত আদায়ের খাত কয়টি? যাকাতের খাতগুলো কি কি?

যাকাত আদায়ের খাত বা মাসারিফ আটটি-

  1. অভাবগ্রস্ত বা ফকির।
  2. সম্বলহীন, মিসকিন।
  3. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীবৃন্দ।
  4. মন জয় করার উদ্দেশ্যে।
  5. মুক্তিকামী দাস।
  6. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি।
  7. আল্লাহর পথে অর্থাৎ ইসলামের খিদমতে নিয়োজিত ব্যক্তি।
  8. মুসাফির বা অসহায় প্রবাসী পথিক।

নিচে মাসারিফের বিবরণ দেওয়া হলো-

  1. অভাবগ্রস্ত বা ফকির: ফকিরকে বাংলায় গরিব বলা হয়। যাদের কিছু না কিছু সম্পদ আছে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। যাদের জীবনধারণের জন্য অপরের সাহায্য-সহযোগিতার উপর নির্ভর করতে হয়, এমন ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া যায়। জীবিকা অর্জনে অক্ষম ব্যক্তি, পঙ্গু, ইয়াতিম শিশু, বিধবা, স্বাস্থ্যহীন, দুর্বল এবং যারা দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার এমন লোকদের সাময়িকভাবে যাকাতের খাত থেকে সাহায্য করা যায়।
  2. মিসকিন: যারা নিঃস্ব, নিজের পেটের অন্নও যোগাড় করতে পারে না এবং অভাবগ্রস্ত থাকা সত্ত্বেও সম্মানের ভয়ে কারো দ্বারস্থ হয় না, তাদের মিসকিন বলে। মিসকিন সম্পর্কে হাদিসে আছে, “যে ব্যক্তি তার প্রয়োজন মোতাবেক সম্পদ পায় না, অথচ আত্মসম্মানের ভয়ে সে এমনভাবে চলে যে, তাকে অভাবী বলে বোঝাও যায় না, যাতে লোকেরা তাকে আর্থিক সাহায্য করতে পারে। আর সে সাহায্যের জন্য কারো কাছে হাতও পাতে না, কিছু চায়ও না।” (বুখারি ও মুসলিম)। মিসকিনকে যাকাত দেওয়া যায়।
  3. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীবৃন্দ: যারা যাকাত আদায় করে, রক্ষণাবেক্ষণ করে, বণ্টন করে ও হিসাবপত্র রাখে, তাদের যাকাতের জন্য নিযুক্ত কর্মচারী বলে। তারা আর্থিক সঙ্গতিসম্পন্ন হলেও যাকাত থেকে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে।
  4. মন জয় করার উদ্দেশ্যে: সদ্য মুসলমান হওয়া ব্যক্তির সমস্যা দূরীকরণে এবং ইসলামের উপর অবিচল রাখার উদ্দেশ্যে তাদের যাকাত দেওয়া যাবে। ইসলামি পরিভাষায় তাদের ‘মুআল্লাফাতুলকুলুব’ বলা হয়েছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে এ জাতীয় লোককে যাকাত দেওয়ার বিধান ছিল।
  5. মুক্তিকামী দাস: যে দাস তার মনিবের সাথে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ সাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ার চুক্তি করেছে এমন দাসকে মুক্তির মূল্য পরিশোধের জন্য যাকাত প্রদান করা যেতে পারে। বর্তমানে ইসলামে ক্রীতদাস প্রথা চালু নেই বিধায় এ খাতে যাকাতের অর্থ বণ্টন করা হয় না।
  6. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি: যে নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম, তাদের যাকাত দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে সাহায্য করা যায়।
  7. আল্লাহর পথে: এর আরবি পরিভাষা হলো ‘ফি সাবিলিল্লাহ’। এটির অন্য অর্থ জিহাদ। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে এবং কুফরি ব্যবস্থাকে নির্মূল করে ইসলামি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সকল প্রচেষ্টাকেই জিহাদ বলে। যে কোনো খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার সংগ্রামই এক প্রকার জিহাদ। এরূপ ইসলামের খিদমতে নিয়োজিত ব্যক্তিকে যাকাত থেকে সাহায্য করা যায়।
  8. অসহায় প্রবাসী পথিক: কোনো ব্যক্তি সফরে গিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়লে বা যাত্রাপথে আর্থিক সংকটের কারণে বিপদে পড়লে সাময়িকভাবে তাকে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়।
পড়ুন
যাকাত শব্দের অর্থ, কী, কাকে বলে, যাকাত কেন দিতে হয়? যাকাতের গুরুত্ব

(৫) যাকাতের গুরুত্ব: যাকাত কেন দিতে হয়?

যাকাতের গুরুত্ব যাকাত কেন দিতে হয়

ইসলামি যাকাত ব্যবস্থা সমাজে প্রচলিত থাকলে, সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের নানাবিধ সমস্যার সমাধান হবে। আবার ধনীরাও তাদের দায়মুক্ত হওয়ার বিশেষ সুযোগ পাবে। কাজেই ইসলামে যাকাতের অনেক গুরুত্ব রয়েছে।

নিম্নে যাকাতের কতিপয় গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো-

ক) যাকাতের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

যাকাতের অন্যতম গুরুত্ব হলো অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা। সমাজের কেউ সম্পদের পাহাড় গড়বে, সুউচ্চ ইমারতে বসবাস করবে, বিলাসবহুল জীবনযাপন করবে, আর কেউ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাবে এমন বিধান ইসলামে নেই।

কেউ শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারবে না, আর বাড়ি বাড়ি ঘুরবে, শান্তি ও সাম্যের ধর্ম ইসলাম তা কিছুতেই সমর্থন করে না। কাজেই সকল শ্রেণির নাগরিকের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য ইসলাম ধনীদের উপর যাকাত ফরজ করেছে।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,

“আল্লাহ তায়ালা লোকের উপর সাদাকা (যাকাত) ফরজ করেছেন। তা নেওয়া হবে ধনীদের থেকে এবং বিলিয়ে দেওয়া হবে দুস্থদের মধ্যে।”

(বুখারি ও মুসলিম)

সাধারণত মানুষের অর্থের প্রতি লিপ্সা থাকে। যে কৃপণ স্বভাবের হয়, সে নিজের কষ্টে উপার্জিত অর্থ নিঃস্বার্থভাবে কাউকে দিতে চায় না। তাই দয়াময় আল্লাহ তায়ালা সম্পদশালী ব্যক্তিদের মনকে সম্পদের লিপ্সা, লোভ, কৃপণতা, স্বার্থপরতা প্রভৃতি দোষ থেকে মুক্ত ও পবিত্র রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি মানুষের মনকে দয়া-মায়া, স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসা ইত্যাদি মানবিক গুণসম্পন্ন করে তোলার জন্য তাদের উপর যাকাত ফরজ করে দিয়েছেন।

সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তায়ালা। মানুষের নিকট তা আমানতস্বরূপ। মানুষ শ্রম ও মেধার দ্বারা সম্পদ অর্জন করবে এবং প্রয়োজন মোতাবেক সম্পদ খরচ করবে। কিন্তু সম্পদ জমা করে রাখা বা কেবল নিজের ভোগবিলাসের জন্য খরচ করা ইসলাম অনুমোদন করে না। কারণ ধনীদের সম্পদে দরিদ্রের অধিকার আছে, তা অবশ্যই আদায় করতে হবে। গরিবের অধিকার আদায় করলে মালিক দায়মুক্ত হবে, সম্পদ পবিত্র হবে; অন্যথায় সম্পদ হালাল হবে না।

পড়ুন
যাকাতের হিসাব/নিসাব ও যাকাত প্রদানের খাত

ইসলামি অর্থনীতিতে পুঁজিবাদ সমর্থন করা হয় না। যাকাত প্রথার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা হয়।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও খুলাফায়ে রাশিদিনের যুগে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাকাত আদায় করা হতো। আদায়কৃত মালের বিতরণও সরকারি ব্যবস্থাপনায় হতো। নিসাবের নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের মালিকরা যাকাত দিতে বাধ্য থাকত। অন্যদিকে যারা যাকাত পাওয়ার হকদার (দাবিদার ) তারা সবাই যাকাতের অর্থ পেয়ে উপকৃত হতো।

কুরআন ও হাদিসের নির্দেশ মোতাবেক যাকাত আদায় ও বিতরণ করা মুসলমানদের একটি পবিত্র দায়িত্ব। এ ব্যবস্থাপনার উপর মুসলমানদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কল্যাণ অনেকাংশে নির্ভরশীল। মুসলিম সম্প্রদায় ইসলামি ব্যবস্থাপনায় যাকাত আদায় করলে সমাজে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য কমে আসবে; কেউ বেকার থাকবে না। বরং মুসলিম সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। অসহায় গরিব মানুষকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করা একটি মানবিক দায়িত্ব। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে এ মানবিক গুণের বিকাশ ঘটবে।

খ) যাকাতের সামাজিক গুরুত্ব

  1. যাকাতের মাধ্যমে সমাজে ধনী-দরিদ্রের মধ্যকার বিরাজমান বৈষম্য দূর হয়। তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক সমতার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। আল্লাহর নির্দেশমতো যথাযথভাবে যাকাত প্রদান করলে সমাজের কোনো লোক অন্নহীন, বস্ত্রহীন, গৃহহীন থাকবে না। কেউ না খেয়ে থাকবে না। কেউ বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না।
  2. সম্পদশালী ব্যক্তিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যাকাত ও সাদাকার (দানের) অর্থে অভাবীদের প্রয়োজন মিটিয়েও অনেক জনহিতকর এবং কল্যাণমূলক কাজ করা যায়। বহু দরিদ্র ব্যক্তিকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা যায়। স্বাস্থ্যবান দরিদ্র শ্রমিককে তার শ্রমের উপযোগী উপকরণ দেওয়া সম্ভব হয়। দরিদ্রের জন্য সেবামূলক অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন ইয়াতিমখানা, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রভৃতি স্থাপন করা যায়। এমনিভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালালে এমন এক সময় আসবে যখন যাকাত গ্রহণ করার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। ইসলামের প্রথম যুগে এমন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে অপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছিল। দৃষ্টান্তস্বরূপ খলিফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রাঃ)-এর যুগের কথা উল্লেখ করা যায়। ইসলামি যাকাত ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে, তাঁর যুগে যাকাত নেওয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া কষ্টকর ছিল।
  3. ইসলামি যাকাত ব্যবস্থা গোটা সমাজকে কৃপণতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা, হিংসা, বিদ্বেষ প্রভৃতি বদভ্যাস থেকে পবিত্র রাখে এবং পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা, ত্যাগ, মমত্ববোধ ইত্যাদি গুণ আরও সুদৃঢ় করে।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

পড়ুন
যাকাত দেওয়ার নিয়ম কি? যাকাত কে দিবে? কাকে দিবে? এবং কাকে দেওয়া যাবে না?

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

surah falaq bangla, সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণসহ অর্থ

সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণসহ অর্থ (surah falaq bangla)

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: (১) সূরা ফালাক বাংলা (২) সূরা ফালাক আরবি (৩) সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ (৪) সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণ ছবি (৫) surah falaq uccharon audio mp3 (৬) surah falaq bangla uccharon video mp4 (৭) সূরা ফালাক এর ফজিলত (৮) সূরা ফালাক এর শানে নুযুল (৯) সূরা ফালাক এর তাফসীর/ব্যাখ্যা (১০) সূরা ফালাক এর শিক্ষা
ইজমা ও কিয়াসের পার্থক্য কি, ইজমা ও কিয়াস বলতে কি বুঝায়, ইজমা ও কিয়াস কি, ইজমা কিয়াস কাকে

ইজমা ও কিয়াসের পার্থক্য কি? ইজমা ও কিয়াস বলতে কি বুঝায়? ইজমা ও কিয়াস কি? ইজমা কিয়াস কাকে বলে?

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: (১) ইজমা ও কিয়াসের পার্থক্য কি? (২) ইজমা ও কিয়াস বলতে কি বুঝায়? (৩) ইজমা ও কিয়াস কি? (৪) ইজমা কিয়াস কাকে বলে?
ফিকহ শব্দের অর্থ কি, ফিকহ কি, ফিকহ কাকে বলে, এর প্রয়োজনীয়তা, আলোচ্য বিষয়, উৎস ও উৎপত্তির কারণ

ফিকহ শব্দের অর্থ কি? ফিকহ কি? ফিকহ কাকে বলে? ফিকহ শাস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা, আলোচ্য বিষয়, উৎস ও এর উৎপত্তির কারণ

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: (১) ফিকাহ শাস্ত্রের পরিচয় (২) ফিকাহ শাস্ত্রের বিষয়বস্তু/আলোচ্য বিষয় (৩) ফিকাহ শাস্ত্রের মূল উৎস বা ভিত্তি (৪) ফিকাহ শাস্ত্রের উৎপত্তির কারণ
বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিস

বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিস

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: নিম্নে বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিসের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো-
surah takasur bangla, সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, তাকাসুর সুরা অনুবাদ ও অর্থসহ

surah takasur bangla: সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, তাকাসুর সুরা অনুবাদ ও অর্থসহ

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: (১) সূরা তাকাসুর/তাকাসুর সুরা পরিচিতি (২) surah takasur bangla/surah takasur in bangla (৩) সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ (৪) সূরা আত তাকাসুর বাংলা অনুবাদ/অর্থ (৫) সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ছবি (৬) takasur surah bangla uchhron MP3 audio (৭) surah at takasur bangla MP4 video (৮) সূরা আত তাকাসুর এর ফজিলত (৯) সূরা তাকাসুর এর শানে নুযুল (১০) সুরা তাকাসুর এর তাফসীর/ব্যাখ্যা (১১) সূরা তাকাসুর এর শিক্ষা
নামাযের ওয়াক্ত বা সময় কখন শুরু হয়, কোন নামায কত রাকাত পড়তে হয়

নামাযের ওয়াক্ত বা সময় কখন শুরু হয়? কোন নামায কত রাকাত পড়তে হয়?

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: (১) ফজরের নামাযের ওয়াক্ত শুরুর সময় (২) জোহরের নামাযের ওয়াক্ত শুরুর সময় (৩) আসরের নামাযের ওয়াক্ত শুরুর সময় (৪) মাগরিবের নামাযের ওয়াক্ত শুরুর সময় (৫) ইশার নামাযের ওয়াক্ত শুরুর সময়
যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরা হলো- (১) যাকাতের পরিচয় (২) যাকাতের ধর্মীয় গুরুত্ব (৩) যাকাতের সামাজিক শিক্ষা (৪) যাকাতের অর্থনৈতিক শিক্ষা
সূরা বাকারার ১৩ ও ১৪ নং আয়াতের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

সূরা বাকারার ১৩ ও ১৪ নং আয়াতের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: নিম্নে সহজ ও সংক্ষিপ্তভাবে সূরা বাকারার ১৩ ও ১৪ নং আয়াতের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো-
নামাজের নিয়ম

নামাজের নিয়ম

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: নামাজের নিয়মসমূহ ১০০% সুন্দর সহজ ভাষায় বিস্তারিত বর্ণনা- (১) নামাজ অর্থ, কি, কাকে বলে? (২) নামাজের সময়সূচি (৩) নামাজ পড়ার নিয়ম (৪) নামাজের আহকাম ও আরকান (৫) নামাজের ওয়াজিবসমূহ (৬) নামাজের সুন্নতসমূহ (৭) নামাজের মুস্তাহাব (৮) নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহ (৯) নামাজ মাকরুহ হওয়ার কারণ (১০) নামাজের নিষিদ্ধ সময় (১১) সিজদাহ (১২) সালাত আদায়ে একনিষ্ঠতা ও একাগ্রতা (১৩) নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য (১৪) নামাজের শিক্ষা
হিংসা কী, কাকে বলে হিংসার কুফল ও এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান

হিংসা কী, কাকে বলে? হিংসার কুফল ও এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান

● ইসলাম
আলোচ্য বিষয়: (১) হিংসা কী? (২) হিংসা কাকে বলে? (৩) হিংসার কুফল (৪) হিংসার ব্যাপারে ইসলামের বিধান