নামজারি কি? জমি খারিজ না করলে কি হয়? নামজারি বাতিল হরে করণীয়

নামজারি কি, জমি খারিজ না করলে কি হয়, নামজারি বাতিল হরে করণীয়

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি অবশ্যই ভালো আছেন।

জমির পর্চা, খতিয়ান বা দলিলে থাকা পুরাতন আনার একক ও আধুনিক একক
জমির পর্চা, খতিয়ান বা দলিলে থাকা পুরাতন আনার একক ও আধুনিক একক

তো বন্ধুরা আপনাদের অনেকেরই যে প্রশ্নটি ছিল সেটি হচ্ছে- নামজারি কি; নামজারি; খারিজ ও মিউটেশন কি একই; জমি খারিজ কি ও কেন; নামজারি কত প্রকার ও কি কি; জমি খারিজ না করলে কি হয়; একই মৌজাতে অনেক পরিমাণে বা বেশি দামের জমি হলে সেগুলো একত্রে নামজারি করতে কি বেশি টাকা লাগবে, নামজারি অনুমোদন হচ্ছেনা কি করবো; নামজারি বাতিল হয়ে গেছে এখন কি করবো; প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব।

(১) নামজারি কি?

নামজারি কি: সহজ ভাষায়, পূর্ববর্তী যে জমির মালিক ছিল তার নামের জায়গায় নতুন মালিকের নামটি সেখানে যুক্ত করার নামই হচ্ছে নামজারি।

ক) নামজারি, খারিজ ও মিউটেশন কি একই?

নামজারি, খারিজ ও মিউটেশন কি একই: হ্যা, নামজারি, খারিজ ও মিউটেশন একই জিনিস।

ইংরেজী মিউটেশন শব্দের বাংলা অর্থ হলো- পরিবর্তন। আইনের ভাষায় এই মিউটেশন শব্দটির অর্থই হলো নামজারি। নামজারি বা নাম খারিজ বলতে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করা বুঝায়। অর্থাত্‍‍ পুরনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে নামজারি/নাম খারিজ বলে।

খ) জমি খারিজ কি ও কেন? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা

কোন ব্যক্তি কোন জমির মালিকানা লাভ করার পর, পূর্ব মালিকের নামের পরিবর্তে নতুন মালিকের নাম সংশ্লিষ্ট খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত করা বা তার নিজ নামে নতুন খতিয়ান খোলার বা রেকর্ড হালনাগাদকরনের যে কার্যক্রম তাকে জমি খারিজ/নামজারি বা মিউটেশন বলে।

পড়ুন
জমির কাজে কোন ভূমি অফিসে যাবেন? বাংলাদেশের সকল প্রকার ভূমি অফিসের পরিচয়

আমরা সম্পত্তির মালিকানার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেটি করি সেটি হচ্ছে যদি একটি জমি ক্রয় করি তখন সংশ্লিষ্ট উপজেলার সাব রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে সেখানে দলিলটি রেজিস্ট্রেশন করি, সেটা হতে পারে সাফ কবলা দলিল, হেবা দলিল, ওসিয়ত, বিনিময় নানা প্রকার দলিল হতে পারে। অর্থ্যাৎ সাব রেজিস্ট্রিশন অফিসে করা দলিলের মাধ্যমে আমরা মালিকানাটা লাভ করি।

তো ভূমি ব্যবস্থায় বাংলাদেশের দুটো মন্ত্রণালয় কাজ করে একটি হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয় যার এর মাধ্যমে আমরা যে সাব রেজিস্ট্রেশন অফিসে দলিল রেজিস্ট্রেশন করলাম। আরেকটি হচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয় যার মাধ্যমে আমরা প্রতি বছর বাংলা বছর হিসেবে সরকারকে জমিটার খাজনা দিয়ে থাকি।

এই যে খাজনা নেওয়ার জন্য সরকার নানা সময় কি করে জরিপ কাজ চালায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মোটামুটি সিএস, এসএ ও আরএস তিনটি হচ্ছে রেকর্ডীয় জরিপ বা রেকর্ডিয় খতিয়ান অর্থাৎ ভূমি জরিপ কর্মকর্তরা জমিতে গিয়ে সরাসরি তারা মেপে দেখেন কত ফিট লম্বা কত ফিট চড়া উঁচু না নিচু।

তার মানে বেসিক আপনার দুটো জিনিস বুঝলেন আইন মন্ত্রণালযয়ের মাধ্যমে আপনি দলিলটি রেজিস্ট্রেশন করেন পূর্ববর্তী মালিক থেকে আপনার মালিকানা আপনার কাছে আসে দলিলের মাধ্যমে। আর দ্বিতীয়টি যেটি সেটি হচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি কমিশনার ভূমি অর্থ্যাৎ উপজেলা ভূমি অফিস।

তো আমরা দলিলের মাধ্যমে মালিকানা পেয়ে গেলাম তখন সেই দলিলটি দিয়ে যেটি করতে হয় উপজেলা ভূমি অফিসে সহকারি কমিশনার ভূমি বা এসিল্যান্ড সাহেবকে আবেদনের মাধ্যমে আমাদেরকে দলিলটি দিতে হয় যে, এই যে মালিক ছিল পূর্ববর্তী উনি সম্পত্তি বিক্রি করে দিছেন এখন সরকারি যে খতিয়ান আছে সরকারি যে রেকর্ড আছে সেই রেকর্ডে আমার নামটা অন্তর্ভুক্ত করুন, আমি সেখানে খাজনা দিব, এটি হচ্ছে নামজারি বা খারিজ করা।

(২) নামজারি কত প্রকার ও কি কি?

তো পাঠক বন্ধুরা নামজারি সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে, এটি মনে রাখবেন।

পড়ুন
দলিল বড় নাকি রেকর্ড খতিয়ান বড়? জমির মালিকানা নির্ধারণে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ

নামজারি প্রকার এক- প্রথম প্রকার যে নামজারি সেটিকে বলা হয় নাম পত্তন বা শুধু নামজারি। নাম পত্তন বা শুধু নামজারিটা কখন হয় যখন কোন রেকর্ডিং এর মালিক মৃত্যুবরণ করেন আমরা যে বললাম যে সরোজমিনে যখন কোন রেকর্ড হয় সম্পত্তিগুলো কার দখলে আছে যখন একটি খতিয়ান প্রস্তুত হয় এটাকে বলা হয় রেকর্ডিং খতিয়ান। এরকম রেকর্ডিং খতিয়ানের কোন মালিক যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন তার যারা সাকসেসর বা উত্তরাধিকারী আছেন তারা খুব সহজেই উত্তরাধিকার সনদ বা ওয়ারিশ সনদ উপস্থাপন করার মাধ্যমে নিজেদের নামে নামজিারি করে নিতে পারেন। তো এটিই হচ্ছে নাম পত্তন বা শুধু নামজারি।

নামজারি প্রকার দুই- দ্বিতীয় প্রকার যে নামজারি সেটিকে বলা হয় জমা খারিজ বা নাম খারিজ। তো বন্ধুরা এই জমা খারিজ বা নাম খারিজ হলো যখন আপনি কোন সম্পত্তির মালিকানা লাভ করবেন দলিলের মাধ্যমে দলিটি যখন রেজিস্টার্ড হবে তখন যেটি হয় সেটি হচ্ছে পূর্ববর্তী মালিকের যে খতিয়ান নাম্বার ছিল হোল্ডিং নাম্বার ছিল সে হোল্ডিং নাম্বার খতিয়ান নাম্বার থেকে পৃথক আপনার নামে নতুন করে একটি খতিয়ান নতুন করে একটি হোল্ডিং নাম্বার খুলবে সেই হোল্ডিং নাম্বারে আপনি কি করবেন খাজনা দিবেন। এটি হচ্ছে জমা খারিজ বা নাম খারিজ।

নামজারি প্রকার তিন- তৃতীয় প্রকার যে নামজারি আছে যেটিকে বলা হয় জমা একত্রিকরণ। সরকারি নিয়ম হিসেবে যেটি হয় একটি মৌজার মধ্যে আপনার একটি মাত্র খতিয়ান থাকবে তো আপনি হয়তো আজক একটি সম্পত্তি ক্রয় করেছেন কালকে অন্য জায়গায় সম্পত্তি ক্রয় করতেছেন অন্য মালিকের কাছ থেকে আজকে আপনি নামজারি করে নিলেন একটি খতিয়ান হয়ে গেল কালকে আবার নামজারি করবেন অন্য একটি খতিয়ান হয়ে যাবে তাহলে একাধিক খতিয়ান হয়ে যায় এজন্য জমাএকত্রিকরণ রাখা হয়েছে অর্থ্যাৎ একটি মৌজায় খতিয়ান থাকবে প্রত্যেক মালিকের।

পড়ুন
দলিল বড় নাকি রেকর্ড খতিয়ান বড়? জমির মালিকানা নির্ধারণে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ

নামজারিটা আপনারা কোথায় করবেন তো বন্ধুরা মনে রাখবেন আপনি যখন দলিল রেজিস্ট্রেশন করবেন সেই দলিলের মূল কপি বা সার্টিফাইট কপি উত্তোলন করার পরে আপনার উপজেলায় অবস্থিত উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কপিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) বরাবর সরাসরি অফিসে গিয়ে বা অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে নামজারি করতে পারবেন।

(৩) জমি খারিজ না করলে কি হয়?

তো এখন কথা হচ্ছে জমি ক্রয়ের পর যদি আপনি নামজারি না করেন তাহলে কি সমস্যাটা হবে?

জমি খারিজ না করলে প্রথম যে সমস্যাটি হয় সেটি হচ্ছে- যদি নামজারি না করেন তাহলে আপনার মালিকানার পূর্ণতা পায় না। কারণ হচ্ছে যখন আপনি সম্পত্তির দলিলে ক্রয় করলেন সেটা যদি আপনি কারো কাছে বিক্রি করতে যায় রেজিস্ট্রেশন আইনের বায়ান্নোর-ক ধারা মোতাবেক আপনি বিক্রি করতে পারবেনা, যেহেতু আপনার নামে খতিয়ানের সৃষ্টি হয়নি। আপনি যদি সেই সম্পত্তির উপর ব্যাংক লোন নিতে চান অবশ্যই নামজারি লাগবে, নামজারি ছাড়া আপনাকে কখনই ব্যাংক লোন দিবেনা।

তাছাড়া জমি খারিজ না করলে দ্বিতীয়ত যেটি হয়ে থাকে সেটি হচ্ছে- আপনি যদি নামজারি না করেন পূর্ববর্তী মালিক যেটি করতে পারে অন্য ব্যক্তির কাছে সম্পত্তিটি বিক্রি করে দিতে পারে। কারণ হচ্ছে এখন পর্যন্ত কোন অটোমেটিক সিস্টেম নাই যে আপনি সম্পত্তিটা ক্রয় করেছেন সেটা উপজেলা ভূমি অফিসে বসে এসিল্যান্ড সাহেব জানবেন, আপনার নামটি হোল্ডিং করবেন, আপনার নামে খাজনা নিবেন, এমন অটোমেটিক সিস্টেম নাই। যদিও একটি এলটি নোটিশ আসে তা এসিল্যান্ড অফিসের যে স্টোর রুম আছে তার মধ্যেই থাকে, এসিল্যান্ড সাহেব সেটি দেখেন না, অফিস সহকারী যিনি আছেন উনি সেটা রিসিভ করেন এবং সেটা স্টোরে রেখে দেন এটাই হচ্ছে বাস্তবতা, যদিও নিয়ম হচ্ছে সেই এলটি নোটিশ দিয়ে নতুন ভূমি মারিকের নাম সৃষ্টি করা, উনারা করেন না।

পড়ুন
জমির কাজে কোন ভূমি অফিসে যাবেন? বাংলাদেশের সকল প্রকার ভূমি অফিসের পরিচয়

জমি খারিজ না করলে তৃতীয়ত যেটি হতে পারে- যদি আপনার সম্পত্তিটি সরকার অধিগ্রহণ করে, তখন যেটি হয় সেটি হচ্ছে সরকার যাদের নামে সর্বশেষ খতিয়ান আছে তাদেরকেই নোটিশ করে যদি সরকার কোন জমি অধিগ্রহণ করে তখন আপনারা সবাই জানেন মোটামুটি তিন গুণ পর্যন্ত বেশি ক্ষতিপূরণ দেয় তো তখন যেটি হয় সেটি হচ্ছে সম্পত্তির দলিলে আপনি মালিকানা পেয়েছেন খতিয়ানের পূর্ববর্তী মালিকের নামে তো জন্য তখন যেটি হয় সেটি হচ্ছে পূর্ববর্তী মালিকের নামে নোটিশ আসে পূর্ববর্তী মালেকই কি করে সে সম্পত্তিটি দাবী করে না না প্রকার তখন আপনাকে কেস মামলায় যেতে হয়।

তাছাড়া জমি খারিজ না করলে চতুর্থ যে সম্ভাবনাটি তৈরি হয়- যেটি আমরা যারা অর্পিত সম্পত্তি, ভিপি প্রপার্টি, শত্রু সম্পত্তি সম্পর্কে জেনেছেন, তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেটি হয়েছে সেটি হচ্ছে, স্টেট এ্যকুজেশন এন্ড টেনডেন্সি এ্যাক্ট অর্থ্যাৎ ১৯৫০ সালে জমিদারি অধিগ্রহণের ফলে যে খতিয়ান সৃষ্টি হয়েছে, সেই খতিয়ানের পরবর্তীতে যারা জমি ক্রয় করেছেন তারা তখন আর নামজারি করেননি। এজন্য যখন ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ এর মধ্যে যেটি হয়েছে, পাকিস্থান সরকার যখন শত্রু সম্পত্তি হিসাব করতে গেল তখন যাদের নামে এসএ রেকর্ডগুলো ছিল তো সেখানে সমস্ত সম্পত্তি তারা ভিপি সম্পত্তি করে নিয়েছে, যেহেতু আপনি নামজারি না করলে, তারমানে আপনি বুঝতে পারছেন নামজারি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

আর নাম যদি অবশ্যই আপনার প্রয়োজন হবে সম্পত্তি বিক্রি করার ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে নামজারি যদি আপনি করে রাখেন তাহলে আপনার মালিকানার পূর্ণতা পায়। একটি দলিল, একটি খতিয়ান এবং দখল এই তিনটি জিনিস যদি আপনার না থাকে কখনোই মালিকানা আপনার পূর্ণতা আসবে না।

দলিল, খতিয়ান এবং দখল। দলিলের মাধ্যমে মালিকানা পাবেন, খতিয়ানের মাধ্যমে সরকারকে সে জমিটার খাজনা দিবেন এবং দখলে থেকে আপনি সেটি কি করবেন ভোগ করবেন সেই সম্পত্তি থেকে, এ তিনটি অবশ্যই আপনার লাগবে।

পড়ুন
দলিল বড় নাকি রেকর্ড খতিয়ান বড়? জমির মালিকানা নির্ধারণে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ

তা আশা করি যারা প্রশ্ন করেন যে জমি খারিজ না করলে কি হয়, নামজারি করলে কি সুবিধা, তারা পরিষ্ক্রভাবে বুঝতে পেরেছেন।

(৪) একই মৌজাতে অনেক পরিমাণে বা বেশি দামের জমি হলে সেগুলো একত্রে নামজারি করতে কি বেশি টাকা লাগবে?

একই মৌজাতে অনেকগুলো দাগ, অনেকগুলো খতিয়ান/পর্চা বা অনেকগুলো দলিল বা জায়গার পরিমাণ বেশি হলে বা জমির মূল্য অনেক বেশি হলে কি নামজারি করতে বেশি টাকা লাগবে: না, একই মৌজাভুক্ত একাধিক দলিল একাধিক খতিয়ান একাধিক হাজারো দলিল হাজারো খতিয়ান সে যে সম্পত্তির মূল্য যাই হোক সেটি দেখার বিষয় না, আপনার নামজারি খরচ একই দিতে হবে। দলিলের বৃদ্ধি পেলে, দাগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, জমির দাম বৃদ্ধি পেলে কখনো আপনার নামধারী খরচটা বাড়ে না।

আমাদেরই যে সমস্যাটি সেটি হয়েছে যে আমরা নিজে তো নামজারি করতে যাই না আমরা কোন দলিল লেখক কোন মুহুরী অথবা তৌহসিলদার অথবা কোন অফিসের কোন দালালকে দিয়ে আমরা নামজারি করায়।

এখন আপনি যাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন উনারতো ব্যাক্তিগত লাভের প্রয়োজন তো আপনি যেহেতু জানেন না সরকারি খরচ কত। যদি বাস্তবে সরকারি খরচ হয় ২ হাজার, উনি আপনাকে ৪ হাজার ৫ হাজার ৮ হাজার ১২ হাজার টাকা দাবি করেন।

আবার দেখা যায় বেশি দামি জায়গা বা জমির পরিমাণ বেশি হলে সেই অনুযায়ী দালাল বা মহুরী বেশি অর্থ দাবি করনে বাস্তবে ১ লক্ষ টাকার ১ শতক জমি নামজারি করতে যদি ২ হাজার টাকা সরকারি খরচ লাগে, ২০ লক্ষ টাকার ২০ শতক জমি নামজারি করতে একই পরিমাণ সরকারি ফি দিতে হয়।

আপনি যদি আপনি নিজে না করে অন্য কারো মাধ্যমে করান সরকারি খরচটা অফিস থেকে জেনে নিবেন, বাকিটা আর যেহেতু ওই ব্যক্তি আপনার হয়ে কাজটি করবে উনার যতটুকু খরচ আছে সেটা আপনার এবং তার মধ্যে বিষয়, তাকে পারিশ্রমিক কত দিবেন সে কত নিবে।

পড়ুন
জমির কাজে কোন ভূমি অফিসে যাবেন? বাংলাদেশের সকল প্রকার ভূমি অফিসের পরিচয়

তো বন্ধুরা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নামজারি, জমাখারিজ ,জমা একত্রিকরণ সম্পর্কে যদি আপনাদের আরও কোন প্রশ্ন থাকে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

(৫) নামজারি অনুমোদন হচ্ছেনা কি করবো? নামজারি বাতিল হয়ে গেছে এখন কি করবো?

মনে রাখবেন যদি ‘এসিল্যান্ড’ আপনার নামজারি বাতিল করে তাহলে ৩০ দিনের মধ্যে আপনি এ‘ডিসি রেভিনিউ’ এর কাছে আবেদন করবেন।

‘এডিসি রেভিনিউ’ যদি আপনার নামজারি এপ্রুভ না করে তখন আপনি যেটা করবেন, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ‘বিভাগীয় কমিশনার’ বরাবর আবেদন করবেন।

উনিও যদি নামজারি এপ্রুভ না করে দেন, তাহলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে আপনি ‘ভূমি আপিল বোর্ড’ এ আপিল করবেন।

সেখান থেকেও যদি আপনি নামজারি না পান, তখন আপনাকে যেতে হবে সিভিল স্যুট করতে হবে দেওয়ানী আদালতে।

আর তার পরবর্তীতে যেটি সেটি হচ্ছে, যদি আপনার খতিয়াতে যদি জমি না থাকে অর্থ্যাৎ দলিলে তো আপনি জমি ক্রয় করে ফেললেন কিন্তু যখন আপনি গেলেন নামজারি করতে সম্পত্তিটা সেখানে খতিয়ানে ততটুকু নেই। যেমন- ১০ শতক জমি আপনি ক্রয় করেছেন এখন থতিয়ানে ৫ শতক আছে, কি করবেন?

তাই ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনি যার কাছ থেকে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন তার মালিকানাটা আগে যাচাই করে দেখবেন, যে আসলেই উনি কি এই ১০ শতাংশ জমি বিক্রি করার যোগ্য ছিলেন কিনা, যদি থাকেন তাহলে আপনি আবার যাবেন ইউনিয়ন ভূমি অফিস বা তহসিল অফিসে গিয়ে দেখবেন সেই সম্পত্তিটা কে নামজারি করে নিয়ে গেছে, কোন খতিয়ানে নিয়ে গেছে, কোন কেস মূলে নিয়ে গেছে, সেখান থেকে বিস্তারিত পাবেন।

তথ্যগুলো পাওয়ার পর আপনি যে জমি যার কাছ থেকে ক্রয় করছেন তার সাথে আলোচনা করবেন, যে এ ব্যক্তি কে আপনি কি সম্পত্তি বিক্রি করেছেন কিনা, যদি ভুলে অথবা নানা প্রকার কারণে হয়ে যেতে পারে তখন আপনি শুধু নির্ধারিত কোর্ট ফি দিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের ‘এসিল্যান্ড’ সাহেবের কাছে একটি বিবিধ কেস দায়ের করতে পারেন সে নামজারি খতিয়ানটি বাতিল করার জন্য। যখন খতিয়ানটি বাতিল হবে, তখন আপনি নতুন করে নামজারির জন্য আবেদন করবেন।

পড়ুন
জমির কাজে কোন ভূমি অফিসে যাবেন? বাংলাদেশের সকল প্রকার ভূমি অফিসের পরিচয়

তো বন্ধুরা, উপরোক্ত আলেচনার মাধ্যমে আমরা নামজারি কি? নামজারি, খারিজ ও মিউটেশন কি একই? জমি খারিজ কি ও কেন? নামজারি কত প্রকার ও কি কি? জমি খারিজ না করলে কি হয়? একই মৌজাতে অনেক পরিমাণে বা বেশি দামের জমি হলে সেগুলো একত্রে নামজারি করতে কি বেশি টাকা লাগবে? নামজারি অনুমোদন হচ্ছেনা কি করবো? নামজারি বাতিল হয়ে গেছে এখন কি করবো? প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে অবগত হলাম।

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, অোমাদের লেখাগুলো পছন্দ করে থাকলে ও এ রকম বিষয়ে আরও বিভিন্ন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Similar Posts

4 Comments

  1. প্রিয় ভাই তোমার জন্য দোয়া ও অসংখ্য ভালবাসা রইল,

  2. ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এই লিখনির জন্য। অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় জমির খারিজ নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই লিখা। আপনার লিখার মাধ্যমে মিউটেশন সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।

  3. আপনার পোস্ট পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছি🖤🖤🖤 অনেক ভালো লাগলো 💝💝

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে কোন কোন কাগজপত্র লাগে

ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে কোন কোন কাগজপত্র লাগে?

আলোচ্য বিষয়: (১) ই-পাসপোর্ট আবেদন করতেযে সকল কাগজপত্র লাগে (২) পেমেন্ট সংক্রান্ত সতর্কতা (৩) গুরুত্বপূর্ণ টিপস
সৌদি আরবে কফিল বা কোম্পানি পাসপোর্ট আটকে রাখলে কী করণীয়

সৌদি আরবে কফিল বা কোম্পানি পাসপোর্ট আটকে রাখলে কী করণীয়?

আলোচ্য বিষয়: (১) কফিল বা কোম্পানি কেন পাসপোর্ট আটকে রাখে? (২) পাসপোর্ট আটকে রাখা কি আইনসম্মত? (৩) পাসপোর্ট আটকে রাখার সমস্যা কী? (৪) পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার জন্য কী করণীয়? (৫) কীভাবে প্রমাণ সংগ্রহ করবেন? (৬) সৌদি আরবের শ্রম আইন সম্পর্কে আরও জানুন (৭) বাস্তব অভিজ্ঞতাঃ একজন প্রবাসীর গল্প (৮) কীভাবে এই সমস্যা এড়ানো যায়?
ওয়ারিশ সনদ ইউনিয়ন পরিষদঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও উত্তোলন প্রক্রিয়া

ওয়ারিশ সনদ ইউনিয়ন পরিষদঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও উত্তোলন প্রক্রিয়া

আলোচ্য বিষয়: (১) ওয়ারিশ সনদ কী? (২) ওয়ারিশ সনদ কেন প্রয়োজন? (৩) ওয়ারিশ সনদ নিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস (৪) ওয়ারিশ সনদ উত্তোলন প্রক্রিয়া (৫) ওয়ারিশ সনদে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা (৬) কোন ওয়ারিশের নাম বাদ দেওয়ার ফলাফল (৭) আদালতের বিবেচনা (৮) ওয়ারিশ সনদের মেয়াদ ও যাচাই (৯) সাধারণ ভুল ও সমাধান (১০) শেষ কথা
থানা থেকে সালিশের জন্য ডাকলে কী করবেন, বিস্তারিত গাইড

থানা থেকে সালিশের জন্য ডাকলে কী করবেন? বিস্তারিত গাইড

আলোচ্য বিষয়: (১) থানা থেকে সালিশের জন্য ডাকঃ এটা কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ? (২) থানার ডাক এড়ানো কেন ভুল? (৩) ফোন কলের সত্যতা যাচাই করুন (৪) প্রস্তুতিঃ থানায় যাওয়ার আগে কী করবেন? (৫) থানায় যাওয়ার সময় কী মাথায় রাখবেন? (৬) সালিশের সময় কীভাবে কথা বলবেন? (৭) সাধারণ ভুল এবং কীভাবে এড়াবেন (৮) সালিশের সুবিধাঃ কেন থানায় সমাধান ভালো? (৯) কিছু সাধারণ মামলা এবং সমাধান (১০) উপসংহার
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম

আলোচ্য বিষয়: (১) নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন (২) প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ (৩) নিবন্ধনাধীর ব্যক্তির পরিচিতি ও জন্মস্থানের ঠিকানা (৪) জন্ম নিবন্ধন ফরম পূরণ করার নিয়ম (৫) পিতা ও মাতার তথ্য (৬) স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা (৭) আবেদনকারীর তথ্য (৮) জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পর্কিত সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও তার উত্তর
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারি পেতে সময়

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারি পেতে সময়

আলোচ্য বিষয়: (১) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারি পেতে সময় লাগে কতদিন? (২) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট মেয়াদ কতদিন? (৩) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো, ধাপ কয়টি? পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারি পেতে সময় কোন ধাপে কিরকম লাগে? (৪) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে কি কি কাগজ লাগে? (৫) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে কত টাকা লাগে? (৬) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে কোথায় যোগাযোগ করতে হয়? (৭) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট আবেদনের সময় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা (৮) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স স্ট্যাটাস চেক (৯) আসল/নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চেক (১০) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনের প্রয়োজনীয় শর্তাবলী (১১) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করার নিয়ম
পাসপোর্ট করার জন্য কি কি কাগজপত্র দরকার হয়

পাসপোর্ট করার জন্য কি কি কাগজপত্র দরকার হয়?

আলোচ্য বিষয়: (১) পাসপোর্ট আবেদনের প্রাথমিক ধাপ (২) প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (৩) শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (৪) সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ নিয়ম (৫) কেন সঠিক কাগজপত্র গুরুত্বপূর্ণ? (৬) অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া (৭) সাধারণ ভুল এবং তা এড়ানোর উপায়
কেন এয়ারপোর্টে পাসপোর্ট ব্লক বা অফলোড করা হয়, সমাধান ও বাঁচার উপায়

কেন এয়ারপোর্টে পাসপোর্ট ব্লক বা অফলোড করা হয়? সমাধান ও বাঁচার উপায়

আলোচ্য বিষয়: (১) পাসপোর্ট অফলোড বা ব্লক হওয়ার প্রধান কারণগুলো (২) পাসপোর্ট ব্লক হলে করণীয় (৩) কীভাবে পাসপোর্ট ব্লক এড়ানো যায়? (৪) বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা
পাসপোর্টে নাম ও বয়সের অমিল থাকলে ভিসা পেতে কী সমস্যা হয়

পাসপোর্টে নাম ও বয়সের অমিল থাকলে ভিসা পেতে কী সমস্যা হয়?

আলোচ্য বিষয়: (১) পাসপোর্টে নাম ও বয়সের অমিল কেন হয়? (২) ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে অমিলের প্রভাব (৩) টুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে অমিলের সমস্যা (৪) ব্ল্যাকলিস্টিং এবং বায়োমেট্রিক তথ্য (৫) কীভাবে পাসপোর্টের নাম ও বয়সের অমিল সংশোধন করবেন? (৬) ভিসা আবেদনের সময় করণীয় (৭) একটি উদাহরণ
ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে জরিমানাকৃত টাকা কোথায় যায়, এই টাকা কে নেয়

ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে জরিমানাকৃত টাকা কোথায় যায়? এই টাকা কে নেয়?

আলোচ্য বিষয়: বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে গিয়ে যখন কর্মকর্তারা জরিমানা আরোপ ও আদায় করেন, তখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে—এই জরিমানার টাকা কোথায় যায়? কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়? তাই এই বিষয়ে আজকে আলোচনা।